আত্মার প্রকারভেদ
আত্মা পাঁচ (৫) প্রকার- ১.ভূতাত্মা (পঞ্চভূত) ২.মানবাত্মা (মন), ৩.মহাত্মা (জ্ঞান) ৪.জীবাত্মা (সাঁই) ও পরমাত্মা (কাঁই)।
এছাড়াও নিম্নরূপেও আত্মার বিভাগ করতে দেখা যায়।
(ক) ১.ক্ষিতি ২.অপ ৩.তেজ ৪.মরুৎ ও ৫.ব্যোম (সংস্কৃত)।
(খ) ১.পরমাত্মা ২.ভূতাত্মা ৩.জীবাত্মা ৪.প্রেতাত্মা ও ৫.গোআত্মা (বাউল)।
(গ) ১.আগুন ২.জল ৩.মাটি ৪.বাতাস ও ৫.বিদ্যুৎ (আত্মতত্ত্ব)।
(ঘ) ১.পরমাত্মা ২.ভূতাত্মা ৩.জীবাত্মা ৪.আত্মারাম ও ৫.আত্মারামেশ্বর (পুরাণী)।
(ঙ) ১.রুহে জিসমানি (رُوحِ ﺟﺴﻤﺎﻨﻰ) ২.রুহে সুলত্বানি (رُوحِ ﺴﻟﻄﺎﻨﻰ) ৩.রুহুল আমিন (رُوحٌ ﺍﻟﻤﻴﻦ) ৪.রুহুল কুদুস (رُوحٌ ﺍﻟﻘﺪﺲ) ও ৫.রুহুল্লাহ (رُوحٌ ﺍﻠﻟﻪ) (কুরানী)।
আত্মার সমন্বয়সাধন
১.অপ ২.অলোক ৩.আগুন ৪.আত্মারাম ৫.আত্মারামেশ্বর ৬.ক্ষিতি ৭.গোয়াত্মা ৮.জল ৯.জীবাত্মা ১০.তেজ ১১.পরমাত্মা ১২.প্রেতাত্মা ১৩.বাতাস ১৪.ব্যোম ১৫.ভূতাত্মা ১৬.মরুৎ ১৭.মহাত্মা ১৮.মাটি ১৯.মানবাত্মা ২০.রুহুল আমিন (رُوحٌ ﺍﻟﻤﻴﻦ) ২১.রুহুল কুদুস (رُوحٌ ﺍﻟﻘﺪﺲ) ২২.রুহুল্লাহ (رُوحٌ ﺍﻠﻟﻪ) ২৩.রুহে জিসমানি (رُوحِ ﺟﺴﻤﺎﻨﻰ) ও ২৪.রুহে সুলত্বানি (رُوحِ ﺴﻟﻄﺎﻨﻰ)। আত্মা সম্পর্কে প্রাপ্ত এসব পরিভাষাদির অভিধা বা অর্থ জেনে নেওয়ার পর আলোচনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে বলে আমরা মনে করি বিধায় নিচে আত্মার পরিভাষাদির অভিধা তুলে ধরা হলো-
(ওপরোক্ত পরিভাষাগুলোর অবিধা জানতে মূল গ্রন্থ দেখুন)
দ্বিতীয় পর্ব...
মানবাত্মা (মন)
মানবাত্মা হলো জীবের মন। সর্ব জীবে ন্যূনাধিক মন থাকা সত্ত্বেও একে অন্য কোন নামে নামকরণ না করে মানবাত্মা বলার কারণ হলো- মানবাত্মা একমাত্র মানবের মধ্যেই সর্বাধিক সার্থক, সাবলীল ও শক্তিশালিরূপে দেখা যায়। সেজন্য এ আত্মাকে মানবাত্মা বলা হয়।
মানবাত্মার সংজ্ঞা
১. মানবীয় কার্যক্রম পরিচালনাকারী আত্মাকে মানবাত্মা বলে।
২. জ্ঞানিন্দ্রিয়াদির দ্বারা আহরিত ইঙ্গিত বা সংকেতাদির সাহায্যে জীবদেহ পরিচালনাকারী শক্তিকে মন বা মানবাত্মা বলে।
৩. মানবীয় আচার-ব্যবহারের ধারক বাহক শক্তিকে মন বা মানবাত্মা বলে।
৪. জীবের যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালনাকারী সত্তাকে মন বা মানবাত্মা বলে।
মানবাত্মার (মনের) প্রকারভেদ
মানবাত্মা দ্বারা যেহেতু মন বুঝায় সেহেতু মানবাত্মার প্রকারভেদের স্থলে মনের প্রকারভেদ আলোচনা করাই যুক্তসঙ্গত হবে বলে আমরা মনে করি। নিচের মনের সংক্ষিপ্ত প্রকারভেদ আলোচনা করা হলো।
মনের প্রকারভেদ
মন চার প্রকার- ১.অচেতন মন ২.অবচেতন মন ৩.চেতন মন ও ৪.সচেতন মন।
১.অচেতন মন
অচেতন বিণ অজ্ঞান, মূর্খ, সংজ্ঞাহীন, চেতনাহীন, চেতনাশূন্য, জড়, বাহ্যজ্ঞানহীন, মোহগ্রস্ত (দেপ্র)১.অচেতন ২.অবচেতন ৩.চেতন ও ৪.সচেতন- এ চার প্রকার মনের অন্যতম।
অচেতন মন বিণ চেতনাহীন মন, চেতনাশূন্য মন, চেতনা উদয় হওয়ার পূর্ববর্তী মন (দেপ্র) রূপকসাহিত্যের- ১.অচেতন মন ২.অবচেতন মন ৩.চেতন মন ও ৪.সচেতন মন- এ চার প্রকার মনের অন্যতম।
অচেতন মনের সংজ্ঞা
মানবসন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর হতে চেতনা উদয় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মনকে অচেতন মন বলে।
অবচেতন মনের পরিচয়
যার আকার ও আয়তন আছে তাকেই পদার্থ বলে। পদার্থের সৃষ্টি ও ধ্বংস নেই, পদার্থের শুধু রূপান্তর রয়েছে(বিজ্ঞান)। তদ্রপ বিশ্বের কোন কিছুরই সৃষ্টি ও ধ্বংস নেই, শুধু রূপান্তর রয়েছে। তদ্রপ জীবকুলেও সৃষ্টি ও ধ্বংস নেই শুধু রূপান্তর রয়েছে। তদ্রপ জীবকুল বা প্রাণিকুলেরও সৃষ্টি ও ধ্বংস নেই কিন্তু রূপান্তর আছে। জীবকুল প্রাপ্ত বয়সে যার যার বীর্যের মধ্যে গিয়ে অবস্থান করে, উপযুক্ত পরিবেশ পেলে আবার বীর্যাধার ভেদ করে বেরিয়ে আসে। যেমন- ধান। ধান শুধু তার বীর্যের মধ্যে প্রবেশ করে আবার যথাযথ ভূমিতে বপণ করলে, তা হতে অংকুর বেরিয়ে আসে। আবার তাতে অনুরূপ ধানই উৎপন্ন হয়। তদ্রপ বিশ্বের প্রতিটি জীবই যার যার বয়স অনুযায়ী অমোঘ প্রকৃতির রূপান্তর চক্রাধীন।
মানুষ ও এক প্রকার জীব। প্রকৃতির এ অমোঘ রূপান্তর চক্রে মানুষ ঘূর্ণায়মান। জন্মগ্রহণের পর প্রাপ্ত বয়সে মানুষ আবার শুক্রে প্রবেশ করে। এ শুক্র গর্ভাশয়ে স্থাপন করলে মাত্র দশ (১০) মাসের ব্যবধানে সে আবার মানবসন্তানরূপে বেরিয়ে আসে। বীর্যাকারে গর্ভাশয়ে যায় আবার বেরিয়ে আসে। এটাই হলো-অমোঘ প্রকৃতির চিররূপান্তর জীবচক্র।
প্রকৃতির রূপান্তর চক্রাধীন এ মানুষ শুক্ররূপে গর্ভাশয়ে প্রবেশ করার পর, কিছু সময়ের ব্যবধানে মানবসন্তানরূপে ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত, মানুষের মানসিক অবস্থা সম্পূর্ণ অচেতন থাকে। অর্থাৎ গর্ভস্থ ভ্রণ বা সন্তানের মন সম্পূর্ণ অচেতন অবস্থায় অবস্থান করে বিধায় জীবের গর্ভাবস্থার মনকে অচেতন মন বলে।
২.অবচেতন মন
অবচেতন বিণ অর্ধচেতন, অর্ধসজ্ঞান, subconscious (দেপ্র) ১.অচেতন ২.অবচেতন ৩.চেতন ও ৪.সচেতন- এ চার প্রকার মনের অন্যতম (পরি) কৈশোরকাল, প্রতিটি জীবের ক্ষেত্রে জন্ম হতে চন্দ্রচেতন বা কামোদ্দীপনা উদয় হওয়া পর্যন্ত সময়, মানুষের ক্ষেত্রে জন্ম হতে গড়ে ১৪ বছর সময়।
অবচেতন মন বিণ সম্পূর্ণ চেতনাহীন বা সম্পূর্ণ চেতনাবান নয় এরূপ মন, অচেতনও নয় আবার পরিপূর্ণ চেতনাও উদ্ভব হয়নি এরূপ মন, চন্দ্রচেতনা বা কামচেতনার উদয় হয়নি এরূপ মন (দেপ্র) রূপকসাহিত্যের- ১.অচেতন মন, ২.অবচেতন মন, ৩.চেতন মন ও ৪.সচেতন মন- এ চার প্রকার মনের অন্যতম।
অবচেতন মনের সংজ্ঞা
১.অচেতন নয় আবার চেতনও নয়, এরূপ মনকেই অবচেতন মন বলে।
২.মানবসন্তান জন্মগ্রহণ করার পর, তার চন্দ্রচেতনা (কামচেতনা) উদয় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মনকে অবচেতন মন বলে।
অবচেতন মনের পরিচয়
মানবসন্তান জন্মগ্রহণের পর দেহ, আত্মা ও মন প্রকৃতিগতভাবেই অর্জন করে থাকে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর নাসিকা যোগে বাতাসের মাধ্যমে অম্লজান সংযুক্ত হওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই, মনের সৃষ্টি হয়। শৈশবকালে জীবের মনটি একেবারে শিশুই থাকে। শৈশবকাল অতিক্রম করে কৈশোরকালে পদার্পণের সঙ্গেসঙ্গেই জীবের মধ্যে চন্দ্রচেতনার অনুভব হতে থাকে। এ সময় জীবের মন অচেতনও থাকে না, আবার পরিপূর্ণ চেতনাও প্রাপ্ত হয় না। জীব মনের এ অবস্থাকেই মহাবিজ্ঞানে অবচেতন মন বলে ধরা হয়।
সৃষ্টি জগতের সর্ব জীবের ক্ষেত্রে একমাত্র চন্দ্রচেতন হওয়াকেই জীবের যৌবনোন্মেষ হওয়া বা চেতন হওয়া বলে। চন্দ্রচেতন হওয়াকে জীবের চেতন হওয়া বলার কারণ হলো- পূর্বজন্মে জীবের যে কর্মের কারণে তাকে পরজন্মে আবার উদয় হতে হয়েছে- সে কর্মের চেতনা উদয় হওয়া। একমাত্র এ চন্দ্রচেতন অনুভূতি ব্যতীত অন্যান্য বিষয় বস্তু যেমন ছিল ঠিক তেমনই রয়েছে। যেমন- হাত, পা, অঙ্গ-প্রত্যাঙ্গাদি, আকাশ, বাতাস, সূর্য-চন্দ্র সব কিছু যেমন ছিল ঠিক তেমনই রয়েছে। অমোঘ প্রকৃতির এ চিররূপান্তর চক্রাধীন জীবের শুধু চন্দ্রচেতনাটিই সাময়িক বন্ধ থাকে, আবার সক্রিয় হয়। জীবের গর্ভাবস্থান সময় হতে শৈশবকাল পর্যন্ত চন্দ্রচেতনা থাকে না। এছাড়া বিশ্বের চলমান অন্যান্য সৃষ্টির মধ্যে অন্য কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় না।
বিশ্বের সব কিছুই চলমান। তদ্রপ সৃষ্টিগুলোও চলমান হওয়ার কারণে, কোন সৃষ্টির কোন শক্তির পরিবর্তন হয় না। একমাত্র জীবের চন্দ্রচেতনা শক্তিটি সাময়িক অচেতন ও অবচেতন হয় অর্থাৎ জীবের চন্দ্রচেতনা শক্তিটি সাময়িক বন্ধ থাকে। সারাসৃষ্টিজগতে শুধু এ পরিবর্তন টুকুই লক্ষ্য করা যায়। তা’ছাড়া সৃষ্টি জগতের সব কিছু যথানিয়মেই চলমান রয়েছে।
৩.চেতন মন
চেতন বিণ প্রাণবান, জীবন্ত, সজীব, জ্ঞানযুক্ত, জ্ঞানবান, সংজ্ঞাবিশিষ্ট, জাগ্রত, চেতনা, সংজ্ঞা, জাগ্রত অবস্থা(রূপ)বি আত্মা, প্রাণ, জীবন, সত্ত্বা (দেপ্র) ১.অচেতন ২.অবচেতন ৩.চেতন ও ৪.সচেতন- এ চার প্রকার মনের অন্যতম।
চেতন মন বিণ চেতনাযুক্ত মন, বোধ ও বুদ্ধির উদয় হয়েছে এরূপ মন, চন্দ্রচেতনা বা কামচেতনার উদয় হয়েছে এরূপ মন (দেপ্র) রূপকসাহিত্যের- ১.অচেতন মন, ২.অবচেতন মন, ৩.চেতন মন ও ৪.সচেতন মন- এ চার প্রকার মনের অন্যতম।
চেতন মনের সংজ্ঞা
জীবের চন্দ্রচেতনাযুক্ত মনকে চেতন মন বলে।
জীবের যৌবনকালকেই সাধারণত চেতন মানসিককাল ধরা হয়। জীবের মনে দুই প্রকার চেতনার উদয় হয়। সেজন্য মনকে আবার দুভাগে ভাগ করা হয়। যথা- ১.চন্দ্রচেতনগতভাবে চেতন মন ও ২.মানসিকভাবে চেতন মন।
চন্দ্র (রূপ)বি চাঁদ, শশী, চন্দমা, চন্দন, নিশাকর, নিশাকান্ত, শশধর, হিমাংশু, সুধাংশু, সুধাকর, ইন্দু, বিধূ, মৃগাংক, শ্রেষ্ঠ, বাঙালী হিন্দুরে উপাধি বিশেষ, পৃথিবীর একটি উপগ্রহ- যা পৃথিবীকে মাসে একবার প্রদক্ষিণ করেবিণ চিত্তরঞ্জক, আনন্দদায়ক, আহ্লাদজনক, চন্দ্রের মতো সুন্দর (আপ্র) আধ্যাত্মিকবিজ্ঞানে বিশেষ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বস্তুর পরে ‘চাঁদ বা চন্দ্র’ শব্দটি প্রত্যয়ের মতো ব্যবহৃত হয় (গুরুচাঁদ, গুরুচন্দ্র), শব্দটি গুরুত্বপূর্ণশব্দাদির পরে বসে কিন্তু কখনো কখনো মূলশব্দের অর্থের পরিবর্তন ঘটায় না (রূনা)বি পরমগুরু, চোর(চরি)বি লালন (উপ)বি অমৃতসুধা, ননি, উপাস্য (রূ)বি সাঁই (দেত)বি পালনকর্তা।
চন্দ্রচেতনা (রূপ)বি কামচেতনা, মৈথুন আকাঙ্ক্ষা (প্র) কামক্ষুধা বা কামচেতনাকে রূপকসাহিত্যে রূপকার্থে চন্দ্রচেতনা বলা হয় (নচ)বি যম (রূ)বি আগুন।
চন্দ্রচেতনাগতভাবে চেতন মন
পূর্বজন্মের চন্দ্রচেতনাবৎ পুনঃচন্দ্রচেতন মন। অর্থাৎ জীবের পিতা-মাতারূপে অবস্থানকালে জীবের মধ্যে চন্দ্রচেতনার যে অবস্থা ছিল পরজন্মেও গর্ভাবস্থা শৈশব ও কৈশোরকাল অতিক্রম করে যৌবনকালে পদার্পণের সঙ্গেসঙ্গেই জীবের চন্দ্রচেতনা ঠিক পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। পরিপূর্ণ যৌবনকালে একটি জীবের মধ্যে ব্যক্তিত্বের যে যে উপাদানাদি বিদ্যমান থাকে পূর্ব জন্মেও জীবের মধ্যে ঠিক সে সে উপাদানই বিদ্যমান ছিল। অর্থাৎ যৌবনকালের পিতা-মাতা এবং যৌবনকালের ছেলে-মেয়ের মধ্যে ব্যক্তিত্বের উপাদানের বিন্দুমাত্র পার্থক্য নেই। এ হতেই বুঝা যায় জীবের মন সাময়িক অচেতন ও অবচেতন হলেও, যৌবনকালে পুনরায় পূর্বজন্মবৎ পরিপূর্ণ চেতনা প্রাপ্ত হয়।
মানসিক বিণ মানত, কল্পনাপ্রসূত, কল্পনাজাত, মন সংক্রান্ত স্ত্রী মানসিকী।
মানসিকভাবে চেতন মন
পূর্বজন্মে পিতামাতারূপ মানসপটে রিপু, রুদ্র ও দশাদির যেরূপ উপস্থিতি ছিল, পরজন্মের যৌবনকালের সন্তানের মানসপটে অবিকল তদ্রƒপই রিপু, রুদ্র ও দশাদির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্ক পিতা-মাতা এবং প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়ের মধ্যে মানসিক অবস্থা সম্পূর্ণ এক ও অভিন্ন।
ওপরোক্ত আলোচনা হতে বুঝা যায় যে, প্রকৃতির অমোঘ রূপান্তর চক্রাধীন মন গর্ভাবস্থায় অচেতন, শৈশব ও কৈশোরকালে অবচেতন থাকলেও যৌবনকালে পুনরায় পরিপূর্ণ চেতনা ফিরে পায়।
৪. সচেতন মন
সচেতন বিণ জীবন্ত, জিয়ান, সতর্ক, সজাগ, সজ্ঞান, প্রাণবান, চেতনাবিশিষ্ট বিপ অচেতন (দেপ্র) ১.অচেতন ২.অবচেতন ৩.চেতন ও ৪.সচেতন- এ চার প্রকার মনের অন্যতম।
সচেতন মন বিণ চেতনাযুক্ত মন, বোধ ও বুদ্ধির উদয় হয়েছে এরূপ মন, আধ্যাত্মিকজ্ঞান বা পারম্পরিকজ্ঞান দ্বারা মনোশুদ্ধি বা আত্মশুদ্ধি করেছে এরূপ মন (দেপ্র) রূপকসাহিত্যের- ১.অচেতন মন, ২.অবচেতন মন, ৩.চেতন মন ও ৪.সচেতন মন- এ চার প্রকার মনের অন্যতম।
সচেতন মনের সংজ্ঞা
যে মনের কার্যকলাপ জ্ঞানের বিচার বিশ্লেষণ দ্বারা পরিচালিত হয় তাকে সচেতন মন বলে।
সচেতন মনের পরিচয়
আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে, মনের কোন জ্ঞান নেই। মন জীবের প্রকৃতিগত এক প্রকার শক্তি। মনের যেহেতু জ্ঞান নেই সেহেতু তাকে সচেতন বলার কারণ কী? প্রকৃতপক্ষে যার জ্ঞান নেই তার মধ্যে সচেতনতাও থাকতে পারে না। এরূপ চিরদ্বান্দ্বিক সম্বন্ধপদ ব্যবহার করার সূক্ষ্ম সমাধাটি নিচে তুলে ধরা হলো।
জীবের যৌবনকালে মন যখন মানসিকভাবে চেতন হয়, তখন মনের মাঝে তার চিরসাথী ও চিরসঙ্গী রিপু, রুদ্র ও দশাদিও এসে উপস্থিত হয়। এ রিপু, রুদ্র ও দশাদির কারণে, পরিবার ও সমাজে সৃষ্টি হয় মারামারি ও হানাহানি। তারপর সৃষ্টি হয় লুণ্ঠন ও প্রাণহানি। মানব মনের রিপু, রুদ্র ও দশাদির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব হতেই এসব ঘটনাদি সংঘটিত হয়। মানসপট হতে এসব ধ্বংসাত্মক বা মানবতা বিধ্বংসী সদস্যাদি অপসারণের জন্য চেতন মনকে দিব্যজ্ঞানের নিকট শিষ্যত্ববরণ করাতে হয়।
দিব্যজ্ঞান থাকে দিব্যজ্ঞানির নিকট বিধায় চেতন মনের মানসপট হতে অপরিপু দূর করানোর জন্য তাকে একজন দিব্যজ্ঞানির নিকট শিষ্যত্ববরণ করাতে হয়। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে মনের জ্ঞান নেই তবে মনের শিষ্যত্ব বরণের প্রয়োজন কী? উত্তরে বলা যায়- মন ও জ্ঞান সর্বসময় একই পাত্রে যুগপদরূপে বিদ্যমান বিধায় মন শাসনের জন্য জ্ঞানের যথাযথ জ্ঞান প্রয়োজন। তাই তো প্রবাদ বলে- “জ্ঞানী যায় জ্ঞানির কাছে, চৈতন্যজ্ঞান পাবার আশে।” একজন স্বল্পজ্ঞানী চৈতন্যজ্ঞানির নিকট ধারাবাহিকভাবে জ্ঞানার্জন করতে করতে যখন চৈতন্যজ্ঞান বা দিব্যজ্ঞান সাগর হতে চৈতন্যজ্ঞান প্রাপ্ত হন তখন তিনি নিজেই দিব্যজ্ঞানী হয়ে যান। দিব্যজ্ঞানী নিজের জ্ঞান দ্বারা নিজের মন শাসন করতে পারেন। অর্থাৎ নিজের জ্ঞানের নিকট নিজের মনকে শিষ্যত্ববরণ করাতে পারেন।
যেমন- লালন সাঁইজি লিখেছেন- “(দেহের গুরু আছে কেবা, শিষ্য হয়ে কে দেয় সেবা, যেদিন তাই জানতে পাবা, কুলের ঘোর যাবে তখন- লালন-২২৩/৩)” জীবদেহের জ্ঞানকে বলা হয় গুরু এবং মনকে বলা হয় শিষ্য।
মানুষের ক্ষেত্রে বলা যায়- সাধারণ মানুষ কোন চৈতন্যজ্ঞানী বা দিব্যজ্ঞানী গুরু বা গোঁসাইয়ের নিকট শিষ্যত্বপদ গ্রহণ করে, যথাযথ আধ্যজ্ঞান অর্জন করে যখন নিজের জ্ঞান দ্বারা নিজের মনকে শাসন করতে থাকে, তখন সে লোকের দ্বারা কোন প্রকার পাপাদি কর্ম সংঘটন হয় না। নিষ্কলুষ ও নিষ্পাপ মনকেই সচেতন মন বলা যায়। তবে মন যেহেতু কোন প্রকার জ্ঞান রাখে না, সে ক্ষেত্রে মনের সচেতন হওয়া ও না হওয়া উভয়ই সমান। তাই বলা যায়- এ সমস্যা সমাধানের জন্য “সচেতনমন” বিশেষণটির পরিবর্তে “সচেতনব্যক্তি” বলাই যুক্তিযুক্ত ছিল। উত্তরে বলা যায়, যেহেতু এখানে মনের প্রকার ভেদ নিয়েই আলোচনা হচ্ছে বিধায় বিশেষণটিও মনের সম্বন্ধ পদ হওয়াই যুক্তিযুক্ত বিধায় “সচেতন মনের” পরিবর্তে “সচেতনব্যক্তি” বলা সিদ্ধ হবে না। এখানে মনের অবস্থার বিভাগের কারণে একান্ত নিরুপায় হয়েই এরূপ অসঙ্গত, দ্বান্দ্বিক ও সাংঘর্ষিক সম্বন্ধ পদটি ব্যবহার করা জন্য পাঠককুলের নিকট ক্ষমাপ্রার্থী।
পরিশেষে বলা যায় মনের সচেতনতা বলতে, ব্যক্তির সচেতনতাই বুঝায়। প্রতিটি জীবের পুনর্জন্মের পর মন প্রকৃতিগতভাবেই চেতন হয় বটে কিন্তু সচেতন হয় না। মন সচেতন করতে হলে, কোন দিব্যজ্ঞানির নিকট হতে দিব্যজ্ঞান অর্জন করেই চেতন মনকে পুনঃসচেতন করতে হয়। এ হতেই আদিকালে গুরু ও শিষ্য পরম্পরার সৃষ্টি হয়। পূর্বকালে প্রতিটি মানুষই দিব্যজ্ঞান অর্জন করার জন্য কোন না কোন দিব্যজ্ঞানী গুরুর নিকট শিষ্যপাঠ গ্রহণ করতেন এবং পরম্পরার মাধ্যমে আধ্যজ্ঞান অর্জন করতেন বিধায় বিগত প্রায় ১০০০ বছর পূর্বেও অসংখ্য দিব্যজ্ঞানী মহান ব্যক্তিত্বের সন্ধান পাওয়া যায়। যেমন- বেদব্যাস, বুদ্ধদেব, হযরত মুহাম্মদ, জারির তাবারি, ইবনে জারির ইত্যাদি। কিন্তু বিগত প্রায় একসহস্র (১,০০০) বছর পূর্ব হতে পরম্পরার কৃত্রিম উপধারার উৎপত্তি হয়। পরম্পরার এ কৃত্রিম উপধারার ধ্বজাধারিরা পরম্পরাকে পুঁজি করে লাখে লাখে শিষ্য করেন বটে কিন্তু দিব্যজ্ঞান বা আধ্যজ্ঞান প্রদান না করে সাম্প্রদায়িক অন্ধবিশ্বাসের ওপর আবার পরম্পরার অন্ধবিশ্বাসের মরণনিগঢ়ে আবদ্ধ করে সাম্প্রদায়িক কিছু পরিভাষা ও নীতিমালার জ্ঞান দান করে বলে দেন যে এসবই আধ্যাত্মিকজ্ঞান। সে কারণে আমাদের বাংভারতীয় উপমহাদেশের হতভাগ্য সরলমনা বাঙালিরা গত এক সহস্রবছর পূর্ব হতে প্রকৃত আধ্যাত্মিকজ্ঞান হতে চিরবঞ্চিত।
এছাড়া মনকে আরো দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ১. সুমন ২. কুমন।
১.সুমন
সুভাববিশিষ্ট মনকে সুমন বলে।
২.কুমন
কুভাববিশিষ্ট মনকে কুমন বলে।
মানবাত্মা বা মনের সদস্যাদি
মানবাত্মা বা মনের মন্দা ও ভালা দু’টি পক্ষ রয়েছে। তারাই মানবাত্মা বা মনকে কলুষিত করে থাকে। নিচে তাদের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হলো।
মনের মন্দাপক্ষ
মনের মন্দাপক্ষের গোষ্ঠী চতুষ্টয় হলো- ১.রিপু, ২.রুদ্র, ৩.মন্দা ও ৪.দশা।
রিপু
রিপু ৬টি। যথা- ১.কাম ২.ক্রোধ ৩.লোভ ৪.মোহ ৫.মদ ও ৬.মাৎসর্য্য।
রুদ্র
রুদ্র ১১টি। যথা- ১.অজ্ঞতা ২.অন্ধত্ব ৩.অন্যায় ৪.উগ্রতা ৫.তাণ্ডব ৬.হতাশা ৭.ব্যর্থতা ৮.ঘৃণা ৯.বৈরাগ্য ১০.অসন্তোস ও ১১.হত্যা।
মন্দা
মন্দা ১০ প্রকার। যথা- ১.অহংকার ২.হিংসা ৩.শত্র“তা ৪.রাগ ৫.কুৎসা ৬.লিপ্সা ৭.মিথ্যা ৮.কৃপণতা ৯.কলা ও ১০.আমিত্ব।
দশা
দশা ১০ প্রকার। যথা- ১.উদ্বেগ ২.জাগরণ ৩.কুড়েমি ৪.মলিনতা ৫.প্রলাপ ৬.ব্যাধি ৭.উম্মাদ ৮.অশান্তি ৯.ভুল ও ১০.জরা।
মনের ভালাপক্ষ
মনের ভালাপক্ষের সদস্যাদি ১০টি- ১.প্রতীজ্ঞা, ২.ধৈর্য, ২.প্রশংসা ৪.সাহস ৫.নিষ্ঠা ৬.ভয় ৭.তৃপ্তি ৮.প্রেম ৯.অভিনিবেশ ও ১০.গণনা।
বিস্তারিত জানার জন্য আমাদের প্রণীত ‘আত্মতত্ত্ব ভেদ’ ৫ম খণ্ড গ্রন্থটি দেখার জন্য অনুরোধ রইল।
মনের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ
মানব সন্তান জন্মগ্রহণ বা বিকশিত হওয়ার পর মানবাত্মা বা মনের উৎপত্তি হয়। বিশেষভাবে মানবের মধ্যে মনের বিদ্যমানতা অত্যধিক পরিলক্ষিত হয় বলে, মনকে মানবাত্মা বলা হয়। মন উৎপত্তি হওয়ার পর একেবারে শিশু অবস্থায় থাকে। ক্রমেক্রমে মন পূর্ণভাবে বিকশিত হয়।
মানব মন বা মানবাত্মার উৎপত্তিকাল সম্বন্ধে দার্শনিকগণ বলেন যে- মন বা মানবাত্মা ব্যক্তির ভিন্ন ও স্বাধীন কোন সত্তা নয়। এটি জ্ঞান নামক সত্তারই ভিন্ন একটি পরিভাষা মাত্র। তারা আরো বলে থাকেন যে- মূল বৈক্তিকসদস্য মাত্র তিনটি যথা- ১.দেহ ২.আত্মা ও ৩.জ্ঞান। এ জ্ঞানকেই চৈতন্যসত্তা, বিবেক বা মন ইত্যাদি নামে ডাকা হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে একজন ব্যক্তির নিকট দেহ, আত্মা ও জ্ঞান এ তিনটি মৌলিকসত্তা ভিন্ন অন্য কোন সত্তার অস্তিত্ব নেই। এ সূত্র হতেই দার্শনিকগণ বলেন যে- ব্যক্তির মধ্যে মন বা মানবাত্মা বলে মৌলিক বা প্রকৃত কোন আত্মা বা সত্তা নেই।
তবে মন (মানবাত্মা) বা জ্ঞান যায়-ই বলি না কেন ব্যক্তির দেহ ও আত্মার পরে তৃতীয় একটি সত্তার অস্তিত্ব সবাই স্বীকার করে থাকেন। এ তৃতীয়সত্তাকেই আধ্যাত্মিকবিজ্ঞানে মানবাত্মা বা মন বলা হয়। এ তৃতীয়সত্তারটির উৎপত্তি সম্পর্কে দার্শনিকগণ ধারণা করেন যে- প্রথমে আত্মা ও পরে দেহ সৃষ্টির পর যখন আত্মা ও দেহ মিলিত হয়ে ব্যক্তিকে জীবন্ত করে তখন ব্যক্তির যাবতীয় জৈবিক কার্যাদি পরিচালনা করার জন্য তৃতীয় একটি সত্তার প্রয়োজন হয়। এ সত্তাটিই হলো মন বা জ্ঞান। ব্যক্তির এ শক্তিটি ব্যক্তির স্মরণশক্তি, বিচারশক্তি, বিশ্লেষণশক্তি বা অনুধাবনশক্তি ইত্যাদি নামে পরিচিত।
ইতিমধ্যে অনেক দার্শনিক উল্লিখিত শক্তিগুলোর সমন্বিত রূপকেই মানবাত্মা বা মন বা জ্ঞান বলে অভিহিত করেছেন। উল্লেখ্য আমাদের প্রণীত ‘আত্মতত্ত্ব ভেদ’ ৫ম খণ্ড গ্রন্থটির মধ্যে আমরা মন ও জ্ঞানকে ভিন্নভিন্ন সত্তারূপে প্রমাণ করতে সমর্থ হয়েছি।
ব্যক্তির দেহ ও জীবাত্মা হতেই মন বা মানবাত্মার উৎপত্তি। জীবন্তব্যক্তি যা কিছু দেখে, যা কিছু করে, যা কিছু শুনে ও যা কিছু অনুধাবন করে তার স্মৃতিভাণ্ডার, গবেষণা, উন্নয়ন ও উদ্ভাবন ইত্যাদি হতেই মানবাত্মা বা মনের উদ্ভব। মানবাত্মা বা মন কোন প্রাকৃতিকশক্তিও নয় আবার কোন পদার্থও নয় বরং এটি একটি কৃত্রিমশক্তি বিধায় এটি অন্য কোন উৎস্য হতে ব্যক্তির দেহে সংযুক্ত হয়েছে বলে প্রমাণ করাও সঠিক হবে না।
পরিশেষে বলা যায় ব্যক্তির দেহ (আদিচতুর্ভূত- আগুন জল মাটি ও বাতাস) ও জীবাত্মার ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হতেই মানবাত্মা বা মনের উদ্ভব হয়েছে। অতঃপর মনের মধ্যে ক্রমেক্রমে নিম্নোক্ত মন্দা ও ভালা স্বভাবাদি প্রবেশ করেছে। মন্দা ও ভালা স্বভাবাদি আবার পাঁচটি পরিবারে বিভক্ত যথা- ১.রিপু ২.রুদ্র ৩.মন্দা ৪.দশা ও ৫.ভালা।
এ পাঁচটি পরিবারের সদস্যাদি হলো- ১.কাম ২.ক্রোধ ৩.লোভ ৪.মোহ ৫.মদ ৬.মাৎসর্য্য ৭.অজ্ঞতা ৮.অন্ধত্ব ৯.অন্যায় ১০.উগ্রতা ১১.তাণ্ডব ১২.হতাশা ১৩.ব্যর্থতা ১৪.ঘৃণা ১৫.বৈরাগ্য ১৬.অসন্তোস ১৭.হত্যা ১৮.অহংকার ১৯.হিংসা ২০.শত্র“তা ২১.রাগ ২২.কুৎসা ২৩.লিপ্সা ২৪.মিথ্যা ২৫.কৃপণতা ২৬.কলা ২৭.আমিত্ব ২৮.উদ্বেগ ২৯.জাগরণ ৩০.কুড়েমি ৩১.মলিনতা ৩২.প্রলাপ ৩৩.ব্যাধি ৩৪.উম্মাদ ৩৫.অশান্তি ৩৬.ভুল ৩৭.জরা ৩৮.প্রতীজ্ঞা, ৩৯.ধৈর্য, ৪০.প্রশংসা ৪১.সাহস ৪২.নিষ্ঠা ৪৩.ভয় ৪৪.তৃপ্তি ৪৫.প্রেম ৪৬.অভিনিবেশ ও ৪৭.গণনা।
এসব সদস্যাদির বিস্তারিত বিবরণ আমাদের প্রণীত ‘আত্মতত্ত্ব ভেদ’ ৫ম খণ্ড গ্রন্থটির মধ্যে বর্ণনা করা হয়েছে। বিস্তারিত জানা ও বুঝার জন্য উক্ত গ্রন্থটি পাঠ করে নিতে পারেন।
আমরা এখানে এতটুকুই বলতে চাই যে- মানবাত্মা বা মন একটি শিশুর মধ্যে প্রথমে একেবারে শূন্য হতেই উৎপত্তি হয়। অতঃপর ক্রমেক্রমে তা বিকশিত হতে থাকে। একসময় এ মানবাত্মার মধ্যে ওপরোক্ত সদস্যাদি এসে উপস্থিত হয় তখন মানবাত্মা পরিষ্কার বা পরিশুদ্ধ করার জন্য একজন পাকা গুরু নিকট শিষ্যত্ব গ্রহণ করে তাঁর সহচায্য গ্রহণ করতে হয়। তারপর গুরুর সাহায্যে মনের ভিতর হতে মন্দা সদস্যাদি বিতাড়ন করে ভালা সদস্যাদি প্রতিষ্ঠিত করতে হয়। তবে কেবল মানুষ পশুকুল হতে মানবকুলে পদার্পণ করতে পারে। নতুবা পশুকুলে জন্মগ্রহণ করে মানুষ পশুকুলেই রয়ে যায়। এককথায় গুরুদীক্ষা গ্রহণ করা ছাড়া কাঠামোগত মানুষ কোনদিনই পশুকুল হতে মানবকুলে আসতে পারে না।
উপসংহারে বলা যায় আত্মার বিচার, আত্মার পুনরুত্থান, আত্মার জন্মান্তর ও আত্মার দোষগুণ আছে ইত্যাদি মতের প্রবক্তা দার্শনিক ও সাম্প্রদায়িক মতানুসারিগণ হয়ত এ মানবাত্মার কথাই বলে থাকেন। নচেত জীবের প্রকৃত জীবাত্মারূপ বিদ্যুৎশক্তিটি এরূপ কোন দোষে দোষী বা এরূপ কোন গুণে গুণী কখনই হতে পারে না।
(সংক্ষিপ্ত সংকলন)
তথ্যসূত্র- আত্মার সৃষ্টি রহস্য (আত্মমুক্তির পথ)- বলন কাঁইজি
Casino Vip | Mapyro
উত্তরমুছুনCasino Vip at Marmora 제천 출장마사지 Parkway, 1 Marmora Rd 이천 출장샵 Marmora, US. (mapyro). 하남 출장안마 Save. Search. MapView. View Map. See map. 여주 출장마사지 Map. Get 밀양 출장샵 Directions. Map. See map. Search. Map.